কেন আপনার রুখে দাঁড়ানো উচিত….


ইউনিলিভার ক্লোজ-আপেরা যা করছে সেটা হল হুবহু তা-ই যেটা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি করেছিল। পার্থক্য হল: ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নিজের সেনাবাহিনী ছিল, আমলাতন্ত্র ছিল। আর ইউনিলিভারেরা নেটিভ আমলাতন্ত্র, নেটিভ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে। ওরা দেশ দখল করে আইন বানিয়ে ব্যবসা জমিয়ে নিত। এরা ১ম বিশ্ব আর জাতিসংঘ-ইইউ দিয়ে নেটিভ সরকারকে চাপ দিয়ে নিজেদের পক্ষে পলিসি করে ব্যবসা জমিয়ে নেয়। একটা কলোনিয়ালিজম, আরেকটা নিও-কলোনিয়ালিজম। উপনিবেশীরা শিক্ষাব্যবস্থা, আইন, আমলাতন্ত্র বাজার ব্যবহার করে পুরো জাতির নৈতিকতা, রুচি, জীবনপ্রণালী, ক্রয় সবকিছু বদলে দেয়।

  • ১৮১৩ সালে মাদ্রাজের গভর্নর দেখাচ্ছেন বৃটিশ পণ্য বিক্রি হচ্ছে না কারণ কেনার রুচি নেই।
  • ১৮৩৫ সালে মেকোলে বলছে, এমন শিক্ষা দেব যার উদ্দেশ্য চামড়ায় ভারতীয়, রুচিতে ইংরেজ তৈরি। 
  • আর ১৯০১ সালে উইলিয়াম ডিগবি দেখাচ্ছেন, ২০ লক্ষ ‘ইউরোপিয়ানাইজড’ ভারতীয়ের জন্য কত লক্ষ পাউন্ড বৃটিশ স্টাইল মালপত্র ভারত আমদানি করেছে। 

রুচি বদলে দিতে ওরা ব্যবহার করতো শিক্ষাব্যবস্থা, পত্র পত্রিকা, নেটিভ এলিট, সাহিত্য-সংস্কৃতি। এরাও হুবহু তা-ই। এদের লক্ষ্য হল প্রাচ্যের ঐতিহ্যবাহী পরিবার কাঠামো ভেঙে দেয়া। উপনিবেশ আমলে এরা সমাজটাকে ভাঙতে পেরেছে ধর্মনিরপেক্ষতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা ইত্যাদি গিলিয়ে। মানুষ হয়ে গেছে এটোমাইজড (বিচ্ছিন্ন ও একাকী)। এরপর যৌথ পরিবার ভেঙে হয়েছে নিউক্লিয়ার পরিবার। এখন পরিবার ব্যাপারটাই ভাঙতে হবে। এজন্য নারী জাগরণকে ব্যবহার করছে, পুরুষতন্ত্র-বিবাহ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এদের লড়াই। বাবাহীন, একাকী, সমাজবিচ্ছিনন্ন, অতিস্বাধীন, ভোগপরস্ত মানুষ একইসাথে বেটার ভোক্তা-ক্রেতা (compulsive consumer) এবং বেটার কর্মী। এরা এটাই চায়। নিজেদের দেশকে এরা আজ যে অবস্থায় এনেছে তা হল:

  1. কাছে আসার কালচার দিয়ে আমেরিকায় গত ৪০ বছরে ৪৯ লক্ষ ভঙ্গুর পরিবার (লিভটুগেদার) তৈরি করেছে। যার উদ্দেশ্যই ভেঙে যাওয়া (fragile family)। ১ম সন্তান জন্মের পর এর ৬৫% ভেঙে যায় (Donahue et al, 2010)। ২য় সন্তান জন্মের পর ভেঙে যায় আরও ৩০%। ফলে আমেরিকার ৪১% শিশু জারজ সন্তান। রেডি আছেন নিজের নাতি-নাতনী জারজ মেনে নিতে। রেডি না থাকলে রুখে দাঁড়ান।
  2. আমেরিকায় ১ম বিয়ে গুলোর ৫০% ডিভোর্স হয়ে যায়। যত বিয়ে ডিভোর্স হয় তার ৪২% এর কারণ দ্বিধা ভেঙে কাছে আসার গল্প, আইমিন পরকীয়া (Janus, 1993)। রেডি আছেন নিজের মেয়ে/ছেলের এই পরিণতি দেখতে? নয়তো রুখে দাঁড়ান। এই কাছে আসা নর্মাল হয়ে গেলে এই দৃশ্যই হবে আপনার পরিবারের চিত্র।
  3. আমেরিকায় বছরে ১০ লক্ষ গর্ভপাত। বৃটেনে মোট প্রেগনেন্সির ২৪% ফেলে দেয়া হয়। ওদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ভালো, আমাদের অত ভালো না। রেডি আছেন প্রতিদিন রাস্তার পাশে নবজাতকের দেহ দেখতে? দিতে পারবেন সন্তানের প্রশ্নের জবাব: বাবা/মা, বেবিটাকে ওর আম্মু রেখে গেছে কেন? উত্তর দিতে না চাইলে রুখে দাঁড়ান।
  4. আমেরিকার ৫০% শিশু বাপমায়ের ডিভোর্স দেখে। বৃটেনে ৩৩%। ব্রোকেন ফ্যামিলির বাচ্চাদের আত্মহত্যার হার, মানসিক সমস্যার হার, একাডেমিক খারাপ করার হার, কারাগারে যাবার হার অনেক অনেক বেশি। আপনি চান এদেশের ৫০% শিশু এমন হোক? নইলে রুখে দাঁড়ান।
  5. ব্রিটেনে ৮১% গর্ভপাত করে অবিবাহিত মেয়েরা। আমেরিকায় ১ম শিশুদের ৪৮% কুমারী মায়ের সন্তান। নিজের মেয়েকে গর্ভপাত করাতে নিয়ে যেতে পারবেন তো মেরী স্টোপসে? না পারলে আজই রুখে দাঁড়ান।

এইসব কাছে আসার গল্প রুখে দাঁড়ান। চিৎকার করে বলুন, ঐ কালচার আমার চাই না। ঐ মুক্তচিন্তা ওপেন মেন্টালিটি আমাদের দরকার নেই। আমরা আমাদের মুসলিম বাঙালী মূল্যবোধ নিয়ে ভালো আছি। পুরুষ হোন। নিজ পরিবারের মেয়েদের ও ছেলেদের ডিফেন্ড করুন এই রাক্ষস সংস্কৃতি থেকে।

  1. যতক্ষণ আপনার সন্তান আপনার হোটেলে খায়, আপনার কষ্টের টাকা উড়িয়ে কাছে আসার গল্প চলবে না। লাঠি হাতে নিন।
  2. ১৪ ফেব্রুয়ারি ঘরের দরজা আটকে রাখুন। প্রয়োজনে বেঁধে রাখুন খাটের সাথে। বলে দিন: বাইরে গেলে এই বাড়ির দরজা চিরকালের মতো বন্ধ।
  3. সন্তানের অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক কঠোর হস্তে দমন করুন। এখন আর সেই নীল খাম চিঠির যুগ নেই। এখন লিটনের ফ্ল্যাট আর ইমার্জেন্সি পিলের যুগ। মাইন্ড ইট। খাবার বন্ধ করে দিন। হার মানবেন না। 
  4. যে সন্তান আল্লাহর উপর ঈমান আনে না, সে আপনার পরিবার নয়। আল্লাহ নূহ আ. কে বলেছেন: নূহ, তোমার ছেলে তোমার পরিবারভুক্ত নয়। সম্পর্কচ্ছেদ করুন। দুইদিন ঘুরে দুনিয়ার বাস্তবতা বুঝে ফেরত আসুক। 

টেস্টোস্টেরোন-ওয়ালা পুরুষ হোন। যার অনুভূতি আছে, শরীরে রক্ত আছে। যার গায়ে লাগে। আমার মেয়ে আমার খেয়ে ধর্মের বিরুদ্ধে গিয়ে শরীর দিয়ে আসবে কাউকে। রাগুন। রাগে কাঁপতে শিখুন। আমার ছেলে আমার হোটেলে খেয়ে হারাম প্রেমে লিপ্ত। ফুঁসে উঠুন। বি আ প্যাট্রিয়ার্ক। নিজের ক্ষমতা, দায়িত্ব, এখতিয়ার ক্লেইম করুন, দখল করুন। বুঝে নিন। আর কত ভাই? আর কতো। সব শেষ হবার আগে রুখে দাঁড়ান।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *