মানুষের মনে এখন অনেক প্রশ্ন। এই পোস্টে বেশ কিছু উত্তর আছে। এমন পোস্ট আমাদের উচিত বেশি বেশি মানুষের কাছে পৌঁছনো। তমাল ভট্টাচার্যের কথায় মানুষ এখন এতটুকু বুঝতে পারছে, শরীয়া মানে এটলিস্ট কাবাবে গোশত বেড়ে যাওয়া। আরও কী কী হবে বা হয়েছে, তা মানুষের সামনে বার বার দাওয়াহ করা দরকার। পোস্টটা কপি করে নিজের ওয়াল থেকে পোস্ট করুন ভায়েরা।
বাংলাদেশের শীর্ষ কয়েকজন ধনী ও তাদের বর্তমান মোট অর্থের সাথে এক বছরের যাকাতের পরিমানঃ [২.৫%]
- মূসা বিন শমসেরঃ মোট সম্পদ প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার ! বা ১২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা প্রায় ! যাকাতের পরিমাণঃ ৩১৫ কোটি টাকা প্রায় !
- সালমান এফ রহমানঃ মোট সম্পদ প্রায় ১.৩ বিলিয়ন ডলার ! বা ১১ হাজার ১০০ কোটি টাকা প্রায় ! যাকাতের পরিমাণঃ ২৭৭ কোটি টাকা প্রায় !
- আহমেদ আকবর সোবহানঃ মোট সম্পদ প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার ! বা ৫১০ কোটি টাকা প্রায় ! যাকাতের পরিমাণঃ ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা প্রায় !
- তারেক রহমানঃ মোট সম্পদ প্রায় ১.৪ বিলিয়ন ডলার ! বা ১১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা প্রায় ! যাকাতের পরিমাণঃ ২৯৫ কোটি টাকা প্রায় !
- সজীব ওয়াজেদ জয়ঃ মোট সম্পদ প্রায় ১.১ বিলিয়ন ডলার ! বা ৯৩২৭ কোটি টাকা প্রায় ! যাকাতের পরিমাণঃ ২৩০ কোটি টাকা প্রায় ! [রেফারেন্স: গুগল; তবে সময়ের সাপেক্ষে হিসাবটা সামনে-পিছনে কমবেশি হয় প্রতিনিয়ত, রূপক হিসেবে ধরার জন্য উল্লেখ করলাম।]
|| এবারে কিছু কথা…..||
[১]
একটু ভালোমতো খেয়াল করলেই বুঝবেন যে সবাইকে দরকার নেই, শেষের স্পেশ্যাল দুজনও বাদ, অন্তত প্রথম জনও যদি কয়েক বছর একাধারে নিয়ম মোতাবেক যাকাত আদায় করে, তাহলেই এদেশের দারিদ্রতা শূন্যের কাছাকাছি গিয়ে ঠেকবে !!! এক বছরে প্রথম তিনজনের মোট যাকাত আসে প্রায় ৬০০,০০,০০,০০০ টাকারও বেশী !
সুন্নাহ মোতাবেক সঠিক ব্যবস্থাপনায় দেওয়া গেলে যা এক বছরের মধ্যে এই বাংলার দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা দুই কোটি মানুষকে টেনে উপরে তুলতে সক্ষম !!! তো উনাদের লেভেলের ধনী রয়েছে আরো ১০-১২ জন, আর উনাদের কাছাকাছি মানের ৫-১০ জন করে “রাঘব বোয়াল” প্রতিটি জেলা-উপজেলায়-ই আছে! তাদের উপর নির্ধারিত ফরজ ‘যাকাত’ যদি তারা ইসলাম নির্ধারিত সুন্নাহ পন্থায় রাষ্ট্রীয় মাধ্যমে বন্টন করে দিতো, তবে একজন লোকেরও এদেশে গরিব থাকা অসম্ভব হয়ে যেত! আর এটাই ইসলামী অর্থব্যবস্থার সৌন্দর্য! যা কিনা পুঁজিপতি-পুঁজিবাদী ও বস্তুবাদী দুনিয়ালোভিদের চোখের বিষ!
বাস্তবতা হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য যত কিছুই করা হোক— পুঁজিবাদি-ধণতন্ত্রিক, কমিউনিস্ট-সমাজতান্ত্রিক, কিংবা রাজতন্ত্রিক-গণতন্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় তা কখনোই সম্ভব নয়! এটা সম্ভব একমাত্র শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই! আর এজন্যই আমি পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র, লিবারেলিজম বা গণতন্ত্র না— প্রয়োজন এগুলো সমূলে ধ্বংস করে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা।
!! শরীয়াহ আইন !!
[২]
বাংলাদেশ ইসলামী রাষ্ট্র না হলেও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। এই দেশ ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক হলেও বেশিরভাগ মানুষ নিজেদের মুসলিম পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। সে হিসেবে এদেশে দারিদ্রতা বিমোচনে যাকাত-ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ প্রভাব থাকার কথা, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে না, নেই! কারণ— যাকাত জালিয়াতি! যাকাত দিতে অস্বীকার করলে একজন স্পষ্ট মুরতাদ-কাফির হয়ে যায়, তারপরও অনেকেই যাকাত ত্যাগ করে নিজেদের মুসলিম দাবী করে! যারা নিয়মিত যাকাত দেয় তারাও দিচ্ছে অধিকাংশই ভুল পদ্ধতিতে! এদেশের মানুষ সত্যিই খুব অদ্ভুত! এদেশে অধিকাংশই এরা যাকাত দেয় ফিতরার নিয়মে! ফিতরা দেয় সদকার নিয়মে! আর কখনো কখনো সদতা দেয় যাকাত স্টাইলে! সব সুবিধামতো! ফলে সমাজে যাকাতের খুব একটা উল্লেখযোগ্য প্রভাবও দেখা যায় না। সদকাহ বা দান ও যাকাতের মধ্যে হাজার হাত পার্থক্য, অথচ এদেশে দুটোর মধ্যে পার্থক্য খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। যাকাত নিয়ে শো-অফ বা রাজনীতির কথা বাদ, এদেশে বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ যেভাবে যাকাত দেয় সেভাবে দেওয়া জায়েয হলেও কতটুকু সুন্নাহসম্মত-ইসলামী তা নিয়ে কোন সন্দেহ থাকার কথা না!
[৩]
সুন্নাহ অনুযায়ী দিতে চাইলে যাকাত দেওয়ার সময় এমনভাবে দিতে হয় যাতে করে এক বছর কেউ যাকাত নিলে পরবর্তী বছর আর তার যাকাত নেওয়ার প্রয়োজন না হয়! বিষয়টা সহজ বোঝাতে সম্ভবত কোনো এক আলিম বলেছিলেন, “কেউ যদি পরপর দু’বছর আপনার কাছে যাকাত নিতে আসে তাহলে বুঝবেন আগেরবার আপনার যাকাত দেওয়া ত্রুটিপূর্ণ ছিল!” সাধারণ শাড়ি-লুঙ্গি-কাপড় দেওয়া কিংবা অনেককে কয়েক হাজার করে করে টাকা দেওয়ার যাকাত পদ্ধতি জায়েজ হলেও মোটেও সুন্নাহসম্মত নয়! এর সাথে সদকার কোন পার্থক্য নেই ! বরঞ্চ যাকাত দেওয়ার উদ্দেশ্য হতে হবে একজনের দারিদ্র বিমোচন, বা তার উপার্জনের ক্ষেত্র তৈরী করে দেওয়া, যাতে করে পরবর্তীতে তাকে আর যাকাত নিতে না হয়! অর্থাৎ সহজ কথায় একজনকে স্বাবলম্বী-আত্মনির্ভরশীল করে দেওয়া! এতো এতো লোককে দিয়ে লোক দেখানো ইবাদত না করে আপনি শুধু একজনকেই যাকাত দিন, কিন্তু তারপরও যেন সেটা পরিপূর্ণরূপে যাকাত হয়! শুধু রমজান মাস বা নির্দিষ্ট সময়ে যাকাত দিতে হবে এমন কোন কথা নেই শরীয়তে। তাই যাকাত নিয়ে জালিয়াতি বন্ধ করুন। যাকাতকে ‘দান’ না ভেবে একেকজনের দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যম বানিয়ে দিন।
[৪]
সদারিদ্রতা বিমোচনে বর্তমান বিশ্বের পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থা বা আমাদের দেশের মিশ্র-অর্থব্যবস্থার বিপরীতে ইসলামী অর্থব্যবস্থা বা সামগ্রিক শরীয়াহ আইনের উপযোগিতা অস্বীকারের কোনো সুযোগ নেই !!!
••• সালাফদের সময় আমাদের মত এভাবে বিচ্ছিন্নভাবে যাকাত না দিয়ে যাকাত দেওয়া হতো বায়তুল মালের মাধ্যমে, বা রাষ্ট্রীয়ভাবে সমস্ত যাকাত একত্রিত করে গরিবদের দারিদ্র বিমোচন করে দেওয়া হতো…। ফলে খলিফা ওমর ইবনে আবদুল আজিজের সময় এমন একটা সময়ে এসেছিল, যখন পুরো রাষ্ট্রেও যাকাত নেওয়ার মত গরিব কাউকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি! ফলে বাধ্য হয়ে সমস্ত যাকাত একত্রিত করে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রসমূহে প্রেরণ করতে হয়েছিল! রহিমাহুল্লাহ!
দারিদ্রতা কোন একক সমস্যা নয়, এটি হাজারো সমস্যার জন্মদাতা। মাদকাসক্তি, খুন-খারাবি, চুরি-ডাকাতি-রাহাজানি, চাঁদাবাজি অসংখ্য সমস্যার পেছনে একটি বড় কারণ এই দারিদ্রতা। এই দারিদ্রতার সমস্যাকে গোড়া থেকে মূলোৎপাটন করে ফেলতে পারে যাকাত ভিত্তিক ইসলামী অর্থব্যবস্থা, আর এজন্যই তাত্ত্বিক হিসেবে ইসলামী রাষ্ট্রে স্বাভাবিকভাবেই অপরাধের পরিমাণ অনেকাংশে কমে আসবে শুরু থেকেই! আর এজন্যই আপনার ‘অপরাধী বিশ্ব’ ইসলামী শরীয়াহ আইনকে এতটা ভয় পায় !!! এই বাংলার বুকে যদি আজ ভাঙ্গাচুরা আংশিক ইসলাম না থেকে শরীয়াহ প্রতিষ্ঠিত থাকতো, তবে কেউ আর চাইলেও করতে পারতো না এসব যাকাত-জালিয়াতি! যাকাত দিতে অস্বীকৃতি জানালে কারো বিরুদ্ধে সরাসরি জিহাদ ঘোষণা করার পরোক্ষ আদেশ তো হাদীসেই পাওয়া যায়!
[৫]
অনেকেই আফসোস করেন, আমাদের দেশের অর্থব্যবস্থা [হারাম] সুদভিত্তিক না হয়ে যাকাত ভিত্তিক হলে কতই না ভালো হতো! কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে আংশিক ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে আপনি পরিপূর্ণ ইসলামের ফ্লেভার কখনোই পাবেন না! তাই শুধু ইসলামী অর্থব্যবস্থার একটি উপকরণ, বা ইসলামী অর্থব্যবস্থা নয়, সম্পূর্ণ ইসলামের কথাই ভাবতে হবে। পুঁজিবাদী চিন্তা কাঠামোর ভেতরে ঢুকে সেটার ইসলামীকরণ করার ব্যর্থচিন্তা বাদ দিয়ে পুরো কাঠামোটাকেই বদলে ফেলার চিন্তা করতে হবে! তেমনি পশ্চিমা ব্যাংকব্যবস্থার ইসলামীকরণ বাদ দিয়ে পুরো ইসলামী অর্থব্যবস্থার কথা চিন্তা করতে হবে! ‘সুদ’ ইসলামী অর্থব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পথে সবচাইতে বড় বাধাগুলোর একটি! অথচ শয়তানি পশ্চিমা বিশ্ব আজ আমাদের দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলার প্রতিটা ব্যবসা ও উপার্জন পদ্ধতির মধ্যে কোনো না কোনো মাত্রায় সুদের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে দিয়েছে অলরেডি! পশ্চিমাদের অর্থায়নে এনজিও ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত গ্রাম গুলোতে পৌঁছে গেছে এই সুদি অর্থব্যবস্থার কালো থাবা!
••• এনজিও বা ব্যাংকের কথা বাদ— আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহার করা ফোনের মধ্যেও যে নিজেদের অজান্তে সুদী কারবার চলছে সেটা অনেকেই জানিনা! আমরা যে অপারেটরগুলো থেকে ২.৪৪ টাকা অতিরিক্ত (সুদ) দিয়ে ইমারজেন্সি ব্যালেন্স নেই, সেটাও যে হারাম হতে পারে, এটা অনেকের ধারণাতেও নেই!
তিরমিজির হাদিস, সুদের সংজ্ঞা জিজ্ঞাসা করা হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
অন্যকে দেওয়া ঋণ যে অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে আসে, সেটাই সুদ।
[হাদিসের মান সহীহ]
সুদ হারাম হওয়া, কিংবা ‘সুদকে হারাম-নাজায়েয মনে না করা’ কুফরী হওয়ার ব্যাপারে কিছু বলার প্রয়োজন নেই! তাই ব্যক্তি পর্যায়ে সতর্ক হোন, আপনজনদের সতর্ক করুন। অন্তত স্পষ্ট করে জানুনঃ
- সুদ দেওয়া-নেওয়ার সাথে জড়িত থাকা হারাম!
- সুদ থেকে আসা অর্থ সম্পূর্ণ হারাম!
- উপার্জনে হারাম কিছু থাকলে যতো আমল-ইবাদতই করেন না কেন, কিছুই কবুল হবে না! কেননা যেকোনো ইবাদত কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত হলো রিজিক সম্পূর্ণরূপে হালাল হওয়া!
••• আর যে নামেই হোক, যেভাবেই হোক, সুদকে সুদ বলে বিশ্বাস না করা— বা সুদকে হারাম-নাজায়েয মনে না করা সরাসরি কুফরী !!! ঈমান ভঙ্গের কারণ। তাই ব্যবসার জন্য ইন্টারেস্ট-লোন, কিংবা ফোনের জন্য ইমারজেন্সি ব্যালেন্সের নামে নিতে থাকা হারাম সুদ থেকে নিজে বাঁচুন, অন্যকে বাঁচান। সর্বনিম্ন পর্যায়ে আমার-আপনার থেকেই তৈরি হোক ক্ষুদ্র প্রতিরোধ!
[৬]
চারিদিকে যথাসম্ভব ‘করজে হাসানাহ’ বা সুদবিহীন ঋণের প্রচার ঘটান। হোক ২-৩ হাজার টাকা করে। আল্লাহর রহমতে দেশের অনেক জায়গাতেই দ্বীনদার ভাইয়েরা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে করজে হাসানার ছোট ছোট ফাউন্ডেশন গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। এই সামান্য করজে হাসানার ব্যবস্থাই হতে পারে সুদী অর্থব্যবস্থার উপর ক্ষুদ্র পর্যায় থেকে আপনার চপেটাঘাত! সামর্থ্য থাকলে আজই তাই কিছু অনুদানের মাধ্যমে যোগদান করতে পারেন এই আন্দোলনে। অথবা নিজের পাড়া-মহল্লা, গ্রাম-ইউনিয়নেই গড়ে তুলতে পারেন স্বতন্ত্র করজে হাসানা ফাউন্ডেশন, হোক তা আপনার ঘর বা মসজিদকে কেন্দ্র করে! বিস্তারিত জানুন নিকটস্থ আলেমের থেকে।
[৭]
‘ইসলাম’ একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও ভারসাম্যপূর্ণ জীবনব্যবস্থা! এখানে নেই কোনো বাড়াবাড়ি বা ছাড়াছাড়ির সুযোগ! এখানে অপরাধ নির্মূলে আইন যেমন কঠোর করা হয়েছে, তেমনি সর্বোচ্চ লক্ষ্য রাখা হয়েছে মানুষের অধিকার রক্ষায়! এখানে কারো পক্ষে চিরকাল গরিব থাকা সম্ভব না, আবার হারাম টাকার পাহাড় গড়াও অসম্ভব! কেউ উপার্জনে অক্ষম হলে তার দায়িত্ব ইসলামী সরকারের! আবার সম্পদের ব্যক্তি মালিকানা স্বীকৃত বলে হালাল উপার্জনে বিত্তবান হওয়াও ইসলামের দৃষ্টিতে মন্দ কিছু নয়! কেউ যদি পরিস্থিতির শিকার হয়ে অপরাধ করে, বাধ্য হয়ে অপরাধ করে— সেখানে রয়েছে হদ-কিসাস-কতলের মতো শক্ত বিধান সাথে সাথে শিথিল হয়ে যাওয়ার নিয়ম! যেমন কেউ ক্ষুধার জ্বালায় চুরি করলে, পরিস্থিতির শিকার হয়ে নিজের অনিচ্ছায় চুরি করলে সেখানে তার কোনো সাজা নেই! উল্টো জবাবদিহিতা ও সাজা হবে ইসলামী রাষ্ট্রপ্রধানের! আবার কেবল লোভ, লালসা, মোহ, বা ইচ্ছাকৃত চুরি করলে তার হাত কাটা পড়বেই! হোক সে দেশের গভর্নর, কিংবা নেতার ভাতিজা !!! এটাই শরীয়াহ আইন !!! যেখানে কাউকে দুই পয়সা ঠকানোর সুযোগ নেই !!! ••• ইসলামী জীবনব্যবস্থা এমন এক আজব জিনিস— যেখানে দেশের রাষ্ট্রপ্রধানও তার নির্ধারিত বেতনের বাইরে হারাম উপার্জনের সুযোগ রাখে না! আবার একজন অশিক্ষিত-মূর্খ লোকও তার পরিশ্রমী-যোগ্যতার বলে হতে পারে লাখপতি! যেখানে নেই কারো ইগো, অহংকার বা রাজনৈতিক ক্ষমতাবলে ভেটো দেওয়ার সুযোগ!
[৮]
চোর-ডাকাত, খুনি-বদমাইশ, মাস্তান-সন্ত্রাস, লুইচ্চা-ধর্ষক-সুগারড্যাডি, চালচোর-ভোটচোর, চাঁদাবাজ-গুমবাজ, ফিতনাবাজ, ঘুষখোর-সুদখোর, সমকামী-লিবারেল, মুনাফিক-মুরতাদ-মডার্নিস্ট সবার জন্য এক মহা আতঙ্কের নাম— ইসলামি শরীয়াহ !!!
শরীয়াহ আইন মানেই হচ্ছে উপরোক্ত একেকজনের জন্য একেক রকম মর্মন্তুদ শাস্তির ব্যবস্থা! কারো থাকবে না হাত, কারো থাকবে না পা, কারো জন্য আছে কঠিন সাজা, আবার কারো জন্য আছে সরাসরি মৃত্যুদণ্ড! নিজ অস্তিত্ব রক্ষার্থেই তাই এরা সবাই ইসলামের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ! শরীয়াহ আইনের বিরোধিতায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ! তাই তো মিডিয়া প্রোপাগান্ডা চালাতে জীবনমরণ পরিশ্রম এদের! এই বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসলামী শরীয়াহ এরই প্রয়োজন নয় কি? বিশ্বব্যাপী এদের দৌরাত্ম্য থামিয়ে সাম্য-ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ইসলামের প্রয়োজন নেই কি? কেন এরা সবাই ইসলামকে এতটা ঘৃণা করে, শরীয়াহকে এতটা ভয় পায়— এবার তো কিছুটা বোঝা উচিত।
[৯]
পুঁজিবাদী সুদী অর্থব্যবস্থাতে গরিবরা কেবল দিনকে দিন গরিবই হয়, আর ধনীরা কেবল দিন দিন ধনীই হয়! যদিও সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্রীয় জিডিপিতে উন্নয়ন হচ্ছে বলে মনে হয়! আর বাংলাদেশেও বাস্তবে এটাই ঘটছে এখন! কেবল বস্তুগত হিসেবে, বা জিডিপি দিয়ে কোন দেশের উন্নতি হিসাব করার মূল সমস্যা এখানেই! কিছু ধনকুবের আল্ট্রা লেভেল উপার্জনের জন্য জিডিপিও অল্প সময়ে উচ্চমাত্রায় চলে গেলেও বাস্তবে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান থেকে যায় আগের মতন, কিংবা হয় আরো নিচুঁ! আর বহির্বিশ্বে প্রচারিত হয় ‘মহৎ উন্নয়ন’ হিসেবে! যে দেশে সুদী অর্থব্যবস্থা থাকবে— সাময়িক কিছু উপকার পাওয়া গেলেও সে দেশে দীর্ঘমেয়াদে কখনোই চূড়ান্ত অর্থনৈতিক মুক্তি সম্ভব না! আর এজন্যই পশ্চিমা উপনিবেশিক শাসকরা আমাদের গরিব ও কথিত থার্ড-ঈয়ার্ল্ড কান্ট্রি গুলোতে সুদসহ ঋণ দিয়ে দিয়ে বিভিন্ন কাজে সহায়তা করতে এতটা আগ্রহী !!! এতে করে মূল পুঁজি যেমন অল্প অল্প করে পশ্চিমের পকেটে যায়, তেমনি করে সুদগ্রাহী দেশগুলো উন্নয়নের নামে বোকার মত একটু একটু করে নিঃস্ব হতে থাকে। তাই এই পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার কোন বড় ক্ষতি করতে না পারলেও অন্তত মনে মনে এর প্রতি রাগ পুষে রাখুন! পুঁজিবাদের ধারক-বাহক সমস্ত আইডিওলজি যেমন গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, লিবারেলিজম ও সমস্ত মানবরচিত কুফরী সংবিধানের প্রতি মন থেকে ঘৃণা রাখুন! কেননা এটিই সত্য যে, “ইসলাম ব্যতীত মানবরচিত কোন মতবাদ-ই মানুষকে অতীতে শান্তি দিতে পারে নি, আর ভবিষ্যতেও শান্তি দিতে পারবে না!”
[১০]
এই পুরো লেখার মূল মেসেজ দুটো! দেশে যাকাতের আমলটিকে সুন্নাহসম্মত ইসলামী করে তোলার আহ্বান, ও একটি মৌলিক উপদেশ…… আত্মপরিচয়ের সংকটে না ভুগে নিজের পরিচয় জানুন— স্পষ্ট করুন নিজের আকীদা-আদর্শ-দ্বীন!
আত্মবিশ্বাসের সাথে শক্ত করে বলুন— “আমি মুসলিম! আমি তাওহীদে বিশ্বাসী! আমি শরীয়াহকামী! মানি না ইসলাম বাদে কোনো পশ্চিমা অর্থব্যবস্থা, মানি না কোনো মানবরচিতসংবিধান, মানি না কোনো মানবসৃষ্ট পশ্চিমা দ্বীন— চাই শুধু আল-কুরআন! আল-ইসলাম! আশ-শারীয়াহ!” বিশ্বাস করুন ভাই! অস্ত্র লাগবে না, নামধারী সমস্ত মুসলিমের মুখে এই সামান্য হুংকারই কুফফারদের প্যান্ট ভিজিয়ে দিতে সক্ষম !!! কেবল আল্লাহর দ্বীনের উপর অটুট বিশ্বাস রাখলেই সব সম্ভব! এমনকি মঙ্গোল, মুঘল, গ্রেট ব্রিটেন, সোভিয়েত ইউনিয়নের পর মাইটি আমেরিকাকেও ঘোল খাওয়ানো সম্ভব!
আল্লাহ আমাদের আদর্শবাহী দ্বীনদার মুসলিম হিসেবে কবুল করে নিন। আমীন।
উপকৃত হলে অবশ্যই কপি করুন৷ উত্তম সদকায়ে জারিয়া হবে ইনশাআল্লাহ।
[আমার প্রস্তাবনা]
আমাদের আলিমগণ উপমহাদেশে দীন কায়েমের পন্থা হিসেবে মদীনা ফরম্যাট (দাওয়াহ-তালিম-তাযকিয়াহ) কে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। উপরের কথাগুলো দাওয়াহ আকারে সর্বমহলে আলোচনা করুন। আপনার পরিচিত যারা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীতে আছে, ক্ষমতাকাঠামোতে আছে, রাজনৈতিক দলে আছে, সবার সাথে দাওয়াহ করুন। মুসলি মাত্রই শরীয়াহকে ভালোবাসে, কুরআন-হাদিস-ফিকহকে ভালোবাসে। তার ভিতরের এই ভালোবাসা উস্কে দিন। আল্লাহ সবাইকে হেদায়াত দিন।
[কালেক্টেড পোস্ট] আল্লাহ লেখককে জাযা দিন।